আপনার যদি পাসপোর্ট করার ইচ্ছা থাকে তাহলে পাসপোর্ট করে নেয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের তথ্য দিতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় জেনে নিতে হয় পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
অর্থাৎ বাংলাদেশে বসে আপনি যদি যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট করে নিতে চান, তাহলে বিভিন্ন রকমের তথ্যের প্রয়োজন হয়।
এবং পাসপোর্ট করার পূর্বে আপনি যদি এই সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কে অবগত হয়ে যান, তাহলে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে কোনরকমে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হবে না।
সেজন্য আপনি যদি পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে চান, বা পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে সেই সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কে জেনে নিতে চান, তাহলে এই আর্টিকেল থেকে সেটি জেনে নিতে পারবেন।
আর্টিকেলের ভিতরে যা থাকছে
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?
এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো আর সেটি হল; আপনি কাদের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করছেন সেটার উপরে নির্ভর করবে পাসপোর্ট তৈরি করতে কি রকমের তথ্যের প্রয়োজন হবে।
ব্যাপারটা এরকম যে; আপনি যদি বাচ্চাদের জন্য পাসপোর্ট করেন, তাহলে এক রকমের তথ্যের প্রয়োজন হবে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট করলে অন্য রকমের তথ্যের প্রয়োজন হবে।
অর্থাৎ বয়স ব্যবধানে পাসপোর্ট তৈরি করার তথ্যগুলো ভিন্নতা পেতে পারে। সেজন্য, এই আর্টিকেলটিতে ভালোভাবে আলোচনা করা হবে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করতে কি কি প্রয়োজন হবে, সে সম্পর্কিত তথ্য।
১ দিনের বেশি বা তার উপরের বয়সের ব্যক্তিদের পাসপোর্ট তৈরি করতে কি কি লাগে?
যাদের বয়স ১ দিন থেকে শুরু করে প্রায় প্রত্যেক বছরের ব্যক্তিবর্গের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করতে যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
- সর্বপ্রথম তথ্য হিসেবে আপনাকে অবশ্যই ই-পাসপোর্ট আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করে নিতে হবে। কিংবা সেটি সংগ্রহ করে নিতে হবে।
- পাসপোর্ট এপ্লিকেশন এর সামারি কপি সংগ্রহ করে নিতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি এর প্রয়োজন হবে।
- যদি বয়স ১৮ বছরের কম হয়ে থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই তাঁর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি থাকার কথা নয়। সেক্ষেত্রে তার জন্ম নিবন্ধনের কপি এর প্রয়োজন হবে।
- পিতামাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের মুল কপি এবং ফটোকপি।
- নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নাগরিকত্ব সনদের প্রয়োজন হবে।
- আপনার পেশা প্রমাণের জন্য পেশা সনদের প্রয়োজন হবে। তবে, যদি বাচ্চা হয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে সেটির প্রয়োজন হবে না।
- যাদের আগের পাসপোর্ট রয়েছে তাদের সেই পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং মূল কপি এর প্রয়োজন হবে। যদি পাসপোর্ট না থাকে তাহলে সেটি প্রয়োজন হবে না।
- এছাড়াও আপনি যদি পাসপোর্ট আবেদন করার পরে ফি জমা দিয়ে দেন, তাহলে পাসপোর্ট আবেদন ফি এর রশিদ এর দরকার হবে।
প্রায় সব বয়সের ব্যক্তিবর্গের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হবে সেগুলো উপরে তুলে ধরা হয়েছে।
আবেদনকারীর বয়স ৬ বছরের কম হলে কি কি তথ্য প্রয়োজন হয়?
যেকোনো পাসপোর্ট আবেদনকারীর বয়স ৬ বছরের কম হয়ে থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তির পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য কি রকমের তথ্যের প্রয়োজন হবে?
যে সমস্ত পাসপোর্ট আবেদনকারীর বয়স ৬ বছর এবং তাদের পাসপোর্ট আবেদন করতে যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
- এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম তথ্য হিসেবে বাবা এবং মায়ের এনআইডি কার্ডের ফটোকপি এর প্রয়োজন হবে। একই সাথে মূল কপি নিয়ে যেতে হবে।
- এক কপি 3R সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর কালার ছবি এর প্রয়োজন হবে। অবশ্যই ছবিটি ল্যাব প্রিন্টেড হতে হবে।
- ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- পিতা এবং মাতা উভয়ের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- আপনি যদি পেশা প্রমাণ করার জন্য কোন রকমের তথ্য দিতে না চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই আপনার শিশুর পেশা ডিপেন্ডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করে নিতে হবে।
আর যাদের বয়স ৬ বছরের কম তারা যদি পাসপোর্ট আবেদন করতে চান, তাহলে তাদের উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো দিতে হবে।
আবেদনকারীর বয়স ৬ বছরের বেশি কিন্তু ১৫ বছরের কম হলে
পাসপোর্ট আবেদনকারী ব্যক্তির বয়স ৬ বছরের বেশি হয় কিন্তু ১৫ বছরের কম হয় তাহলে তথ্য হিসেবে কি রকমের ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে?
৬ বছরের বেশি কিন্তু ১৫ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিবর্গের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করতে যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
- এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম তথ্য হিসেবে আপনাকে আপনার পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি সংগ্রহ করে নিতে হবে। অর্থাৎ আবেদনকৃত ব্যক্তির পিতা-মাতার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং মূলকপি এর প্রয়োজন হবে।
- এক কপি 3R সাইড সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড কালার শো ছবি প্রয়োজন হবে। যেটি ল্যাব প্রিন্ট করা থাকতে হবে।
- আবেদনকৃত ব্যক্তির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- পিতা-মাতা উভয়ের জন্য দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- পেশা ডিপেন্ডেড দিতে হবে। তাহলে পেশা প্রমাণের তথ্য প্রয়োজন হবে না।
আর কোন পাসপোর্ট আবেদনকারীর বয়স ৬ বছরের বেশি এবং ১৫ বছরের কম হয়ে থাকে তাহলে উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো সাথে নিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করতে হবে।
সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি তথ্য লাগবে?
এবার আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন, আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের উর্ধ্বে হয়ে থাকে, তাহলে আপনি যদি পাসপোর্ট আবেদন করতে চান তাহলে কি রকমের তথ্যের প্রয়োজন হবে?
অর্থাৎ প্রায় প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করতে যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হবে সেই সমস্ত তথ্য নিচে থেকে সংগ্রহ করে নিন।
এই কাজটি করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম যে তথ্যটি সংগ্রহ করে নিতে হবে সেটি হল পাসপোর্ট আবেদন ফরম। আপনি চাইলে তা পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হবে। জাতীয় পরিচয় পত্রের মূল কপি এবং ফটোকপি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
- পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এর প্রয়োজন হবে।
- আপনার পেশা প্রমাণের জন্য অবশ্যই তথ্য সাথে নিয়ে যেতে হবে। অর্থাৎ পেশা প্রমাণের জন্য ডকুমেন্ট দাখিল করতে হবে।
- আপনার যদি পূর্বের পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে পূর্বের পাসপোর্ট এর ফটোকপি সাথে নিয়ে যেতে হবে।
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এর প্রয়োজন হবে।
- সরকারি চাকরিজীবী হলে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার জন্য সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে GO/NOC সাথে নিয়ে যেতে পারেন।
- এছাড়াও আপনাকে শনাক্তকরণের জন্য নাগরিকত্ব সনদের প্রয়োজন হবে।
উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো সাথে নিয়ে গেলে আপনি পাসপোর্ট আবেদন করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে সেই সম্পর্কিত তথ্য উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
অর্থাৎ বয়স অনুযায়ী আবেদন করার তথ্য গুলোর যে ভিন্নতা রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এখানে একটি বিষয় বলে রাখা ভালো আর সেটি হল, আপনার বয়স অনুযায়ী আপনার পাসপোর্ট আবেদন করার তথ্যের ভিন্নতা দেখা যাবে।
এছাড়াও এখানে যে সমস্ত আবেদন ফরমের কথা বলা হয়েছে সেগুলো আপনি চাইলে পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
অথবা আপনি চাইলে পাসপোর্ট এর ওয়েবসাইট থেকে এই সমস্ত তথ্যগুলো সংগ্রহ করে নিতে পারবেন এবং এই সমস্ত আবেদন ফরম কপি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।
যদি আপনি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে অস্বস্তিবোধ করেন, তাহলে আপনি চাইলে সেগুলো পাসপোর্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করার পরে তারপরে ফিলাপ করতে পারবেন।
তবে তথ্য হিসেবে অবশ্যই যে কোন ডকুমেন্ট এর মেইন কপি এবং একইসাথে ফটোস্ট্যাট কপি সাথে নিয়ে যাবেন।