আপনি যদি অনলাইনে মাধ্যমে নতুন পাসপোর্ট আবেদন করতে চান কিংবা ই পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিতে চান, তাহলে এই আর্টিকেল আপনার জন্য একটি অনন্য গাইড হতে চলেছে।
কারণ এই আর্টিকেল থেকে আপনি চাইলে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম কিংবা আবেদন করা রিলেটেড যতগুলো তথ্য রয়েছে, সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
অর্থাৎ একেবারে শূন্য থেকে শিখরে পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম, যা অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম কিংবা পাসপোর্ট করতে কি কি রকমের তথ্য প্রয়োজন হবে, সেই সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
সেজন্য আর দেরি না করে এখনি আর্টিকেলটির শুরু করা যাক এবং পাসপোর্ট সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য গুলো জেনে নেয়া যাক।
আর্টিকেলের ভিতরে যা থাকছে
- 1 পাসপোর্ট কারা করতে পারবেন?
- 2 পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে ?
- 3 অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
- 4 ই পাসপোর্ট আবেদন করার পরবর্তী কাজ
- 5 পাসপোর্ট অফিসে কি কি নিয়ে যাবেন?
- 6 আবেদন জমা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি এর পরে কি করব?
- 7 কত ধরনের পাসপোর্ট আবেদন করা যায়?
- 8 পাসপোর্ট আবেদন ফি কত টাকা?
- 9 পাসপোর্ট আবেদন করার পরবর্তী পদক্ষেপ
- 10 পাসপোর্ট আবেদন করার কত দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন?
পাসপোর্ট কারা করতে পারবেন?
আপনি যদি বাংলাদেশী পাসপোর্ট করতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশের অধিবাসী হতে হবে। যে কারো বয়স ১ দিন থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের হয়ে থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তি চাইলে বাংলাদেশী পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবেন।
তবে পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয় এবং বেশ কিছু তথ্য দেয়ার মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নিতে হয়।
এক্ষেত্রে আবেদন করার জন্য বেশকিছু পর্যায় কিংবা ধাপ রয়েছে, যেগুলো আপনাকে সঠিকভাবে ডিঙিয়ে তারপরে আবেদন করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে ?
একদম স্বাভাবিকভাবে সর্বপ্রথম আপনাকে যে বিষয়টি জেনে নিতে হবে সেটি হল আপনি যদি পাসপোর্ট আবেদন করতে চান, তাহলে পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি রকমের তত্ত্বের প্রয়োজন হবে।
ভিন্ন ভিন্ন বয়সের ব্যক্তিবর্গের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করার তথ্যের যে সমস্ত বিষয়টি রয়েছে, সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়ে থাকে।
অর্থাৎ; প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করার যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হয়, অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে সেইসমস্ত তত্ত্বের গরমিল দেখা যায়।
অপ্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট আবেদন করার শর্ত
আপনি যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন কিংবা আপনার বয়স ১ বছর থেকে ১৮ বছরের ভিতরে হয়ে থাকে তাহলে পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হবে সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
- পাসপোর্ট আবেদন ফরম এর প্রয়োজন হবে।
- পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের মূল কপি এবং ফটোকপি এর প্রয়োজন হবে।
- যে ব্যক্তি পাসপোর্ট করতে চায় সেই ব্যক্তির ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- এক কপি 3R সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড কালার ছবি হতে হবে। এই ছবিটি অবশ্যই ল্যাব প্রিন্ট হতে হবে।
- পিতা-মাতা উভয়ের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবির প্রয়োজন হবে।
- এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার পেশা যাচাই-বাছাই না করাতে চান, তাহলে যে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির পাসপোর্ট আবেদন করবেন, সেই ব্যক্তির পেশা ডিপেন্ডেন্ট সিলেক্ট করে নিতে পারেন।
- নাগরিকত্ব সনদের প্রয়োজন হবে।
একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত তথ্যের প্রয়োজন হবে।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগবে?
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বা যে ব্যক্তির বয়স ১৮ বছর বা তার উর্ধ্বে রয়েছে সেই ব্যক্তি যদি ই পাসপোর্ট করার নিয়ম জেনে পাসপোর্ট আবেদন করতে চান, তাহলে পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়?
- সর্বপ্রথম তথ্য হিসেবে e-passport আবেদনের প্রিন্ট কপি এর প্রয়োজন হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্রের প্রয়োজন হবে। সেটি না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সনদের প্রয়োজন হবে।
- পূর্ববর্তী পাসপোর্টের ফটোকপি ও অরিজিনাল পাসপোর্ট লাগতে পারে সেজন্য এটিকে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে।
- ঠিকানা প্রমাণের জন্য ইউটিলিটি বিল এবং নাগরিকত্ব সনদের প্রয়োজন হবে।
- পেশাগত সনদের ফটোকপি বা চাকুরীর আইডি কার্ড (পেশাজীবির ক্ষেত্রে- যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হিসাবরক্ষক, আইনজীবি)
- অনলাইনে আবেদনের সামারি কপি এর প্রয়োজন হবে।
- আবেদনের কপি এর প্রয়োজন হবে।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো প্রয়োজন হবে।
এছাড়াও প্রায় প্রত্যেক বয়সের ব্যক্তিদের জন্য পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত তত্ত্বের প্রয়োজন হয়, সেই সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কে জেনে নিতে চাইলে নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি দেখে নিতে পারেন।
জেনে নিন: পাসপোর্ট আবেদন করতে কি কি লাগে?
উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটি দেখে নিলে আপনি এই সম্পর্কে নিশ্চিত অবস্থানে থাকতে পারবেন যে পাসপোর্ট আবেদন করতে আসলে কি কিরকম তথ্যের প্রয়োজন হয়।
অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
আপনি যদি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম জেনে করতে চান, তাহলে কি রকমের পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে? কিংবা কয়েকটি পদক্ষেপ অনুসরণ করার মাধ্যমে কিভাবে আপনি চাইলে সফলভাবেই পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন?
ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম জানার জন্য, কিংবা ই পাসপোর্ট করে নেয়ার যে সমস্ত তথ্যাবলী রয়েছে সেই সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নিচে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
একদম সর্বপ্রথম তথ্য হিসেবে আপনাকে সর্বপ্রথম নিম্নলিখিত লিংকে ভিজিট করতে হবে।
যখনই আপনি উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করবেন তখন আপনি পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য যে সমস্ত তথ্য দিয়ে বক্স ফিলাপ করতে হয়, সে সমস্ত বক্স গুলো পেয়ে যাবেন।
ধাপ ১: আপনার অঞ্চলে ই-পাসপোর্ট রয়েছে কিনা সেটা চেক করা।
যখনই আপনি উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করবেন তখন আপনাকে আপনার জেলা সিলেক্ট করে নিতে হবে এবং তারপরে আপনার নিকটস্থ যে পুলিশ স্টেশন রয়েছে; সেটি সিলেক্ট করে নিতে হবে।
এছাড়াও আপনি বাংলাদেশে বসে নাকি বিদেশে বসে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম জেনে নেয়ার মাধ্যমে নতুন পাসপোর্ট আবেদন করছেন সেটি নির্বাচন করে নিতে হবে।
আপনার জেলা এবং নিকটস্থ পুলিশ স্টেশন যথাযথভাবে সিলেক্ট করে নেয়ার পরে কন্টিনিউ বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিন।
ধাপ ২: ইমেইল এড্রেস
এবার দ্বিতীয় ধাপে ; আপনাকে এমন একটি ইমেইল এড্রেস সিলেক্ট করে নিতে হবে, যে ইমেইল এড্রেস এর মাধ্যমে আপনি পাসপোর্ট আবেদন করবেন।
পাসপোর্ট সংক্রান্ত যে সমস্ত তথ্যবলী রয়েছে, সে সমস্ত তথ্যাবলী আপনি এই ইমেইল এড্রেস এর মাধ্যমে পেয়ে যাবেন। এছাড়াও লগইন করার ক্ষেত্রে এই ইমেইল এড্রেস এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
সেজন্য আপনার সর্বাধিক ব্যবহৃত যে ইমেইল এড্রেস রয়েছে, সেটি বসিয়ে দিন এবং তার পরে পুনরায় কন্টিনুয়ে বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিন।
যখনই আপনি ইমেইল এড্রেস দিয়ে দিবেন এবং কন্টিনুয়ে বাটনে ক্লিক করে দিবেন, তখন আপনি অন্য আরেকটি পেজে চলে যেতে পারবেন।
এই পেজটিতে আপনাকে আপনার ই-মেইল এড্রেসটি পুনরায় বসিয়ে দিতে হবে এবং তারপরে আপনার অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত যে সমস্ত তথ্য রয়েছে, সে সমস্ত তথ্য গুলো বসিয়ে দিতে হবে।
অর্থাৎ ; পরবর্তী সময়ে পাসপোর্ট পুনরায় আবেদন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য ইমেইল এড্রেস এবং পাসওয়ার্ড নির্বাচন করে নিতে হবে, যাতে করে আপনি লগইন করতে পারেন।
এছাড়াও আপনার আইডি কার্ডের তথ্য অনুযায়ী আপনার অ্যাকাউন্টের জন্য নাম এবং অন্যান্য তথ্যগুলো সম্পৃক্ত করে নিতে হবে।
সমস্ত তথ্যগুলো যথাযথভাবে সম্পৃক্ত করে নিন এবং তারপরে “Create account ” বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিন।
সমস্ত তথ্য যথাযথভাবে দেয়ার পরে আপনার ইমেইল এড্রেস একটি কনফারমেশন ইমেইল যাবে। সেটি কনফার্ম করার মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি করার কাজ নিশ্চিত করে নেবেন।
ধাপ ৩: ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করা
যখন আপনি ইমেইল এড্রেস দেয়ার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নিবেন তখন ইমেইল এড্রেস ভেরিফাই করে নেয়ার পরে ই-পাসপোর্টের ওয়েবসাইটে লগইন করে নিন।
লগইন করে নেয়ার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরে Apply for a new Passport নামের যে বাটন পাবেন, সে বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিন।
এবং তারপরে; Passport Type হিসেবে সাধারণ পাসপোর্ট হলে Ordinary এবং সরকারি আদেশে বা NOC এর মাধ্যমে পাসপোর্ট হলে Official সিলেক্ট করুন।
এবং তারপরে save and continue বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিন।
যখনই আপনি সেভ এন্ড কন্টিনিউ বাটন এর উপরে ক্লিক করে দিবেন, তখন আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দেয়ার মত অপশন পেয়ে যাবেন।
অর্থাৎ আপনার ভোটার আইডি কার্ড সাথে নিয়ে আপনার যে সমস্ত তথ্য রয়েছে, সে সমস্ত তথ্য গুলো ইংরেজিতে যথাযথভাবে ফিলাপ করে দিন।
মনে রাখবেন, তথ্যগুলো ফিলাপ করার সময় অবশ্যই সঠিক ফরমেটে সে সমস্ত তথ্য গুলো দিবেন। কারণ তত্ত্ব যদি গরমিল করেন তাহলে পাসপোর্ট সংশোধন করার বিষয়টি খুবই জটিল একটি প্রক্রিয়া।
সেজন্য, প্রত্যেকটি তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে দিন এবং তারপরে “Save and Continue” বাটনে উপরে ক্লিক করে দিন।
যখনই আপনি এই অপশনটি যথাযথভাবে ফিলাপ করে দিবেন, তারপরে আপনাকে অন্য আরেকটি অপশন এ নিয়ে যাওয়া হবে।
ধাপ:৪ – আপনার এড্রেস ইনপুট করা
এই ধাপে আপনাকে আপনার, বর্তমানে ড্রেস এবং একই সাথে পার্মানেন্ট অ্যাড্রেস ভালোভাবে বসিয়ে দিতে হবে, এড্রেস লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রে যেভাবে দেয়া আছে সেভাবে অনুসরণ করুন।
যদি আপনার বর্তমান এবং পার্মানেন্ট অ্যাড্রেসে একই হয়ে থাকে, তাহলে পুনরায় এটি ইনপুট না দিয়ে, (Present address is the same as permanent) টিক মার্ক করে দিলে সেটি নিশ্চিত ভাবে বসে যাবে।
এবং তারপরে একই ধাপের নিচে থেকে আপনি পাসপোর্ট অফিস নির্বাচন করে নিতে পারবেন কিংবা বাংলাদেশ মিশন নির্বাচন করে নিতে পারবেন।
ধাপ: ৫ – আইডি কার্ডের তথ্য
এবার আপনার আইডি কার্ডের যে সমস্ত ইনফরমেশন রয়েছে, সেগুলো ভালোভাবে বসিয়ে দিতে হবে অর্থাৎ আপনার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং আপনার নাম সহ আরো যাবতীয় বিষয় যেগুলো এখানে ইনপুট দেয়ার কথা সেগুলো দিয়ে দিতে হবে।
এছাড়াও আপনার যদি পূর্বে থেকে কোন পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটি এখান থেকে নির্বাচন করে নেবেন। ভুলেও এই বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করবেন না।
ধাপ ৬ : পিতা-মাতার তথ্য
৬ষ্ট ধাপে আপনাকে আপনার পিতা মাতার ইনফরমেশন ভালোভাবে বসিয়ে দিতে হবে।
এখানে পিতা-মাতার আইডি কার্ডের নাম্বারটি অপশনাল হিসেবে দেয়া আছে, তারপরেও আপনাকে এটি বসিয়ে দিতে হবে; না হলে আপনি জটিলতায় পড়বেন।
ধাপ: ৭ – বিবাহিত স্ট্যাটাস
আপনার বিবাহিত স্ট্যাটাস এখানে এখান থেকে নির্বাচন করে নিবেন।
যদি আপনি বিবাহিত হয়ে থাকেন,এবং আপনি যদি এই অপশনটি নির্বাচন করে ফেলেন, তাহলে বিবাহ সংক্রান্ত যে সমস্ত কাগজপত্র রয়েছে সেগুলো আবেদনপত্র জমা দেয়ার সময় উত্থাপন করা লাগবে।
ধাপ: ৮ – জরুরি যোগাযোগের পদ্ধতি নির্বাচন
এখান থেকে আপনাকে ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট নির্বাচন করে নিতে হবে।
'ইমারজেন্সি কন্টাক্ট' মূলত পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সময় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাবে, আপনার নাম্বারে কল না করে তারা ইমারজেন্সি কন্টাক্ট নাম্বারে কল করবে।
ধাপ: ৯ – পাসপোর্ট এর মেয়াদ এবং পৃষ্টা নির্বাচন
এবার আপনি শুধুমাত্র ৪৮ পৃষ্ঠা এবং ৫ বছর কিংবা ১০ বছর মেয়াদের জন্য পাসপোর্ট তৈরি করার যে অপশন রয়েছে সেটি পেয়ে যাবেন।
পূর্বে ৬৪ পৃষ্ঠা থাকলেও বর্তমানে সেটি আর কন্টিনিউ হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে এখান থেকে ৪৮ পৃষ্টা নির্বাচন করে নিতে হবে।
ধাপ: ১০ – ডেলিভারির ধরন নির্বাচন
এবার আপনি কি রকমের ডেলিভারি পেতে চান, সেটি আপনাকে নির্বাচন করে নিতে হবে।
আপনি যদি এক্সপ্রেস ডেলিভারি নির্বাচন করেন তাহলে সেটি কম কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পাইয়ে দিবে, তবে সে ক্ষেত্রে রেগুলার ডেলিভারি এর চেয়ে বেশি চার্জ দিতে হবে।
দেখে নিন: পাসপোর্ট ফি এবং ডেলিভারি সময়
সর্বশেষ ধাপ : তথ্য যাচাই করা এবং আবেদন প্রেরন করা
এবং আপনার দেয়া যদি প্রত্যেকটি তথ্য সঠিক থেকে থাকে, তাহলে আপনাকে (আমি শপথ করে বলছি যে আবেদনপত্রের সকল তথ্য সত্য আমি পাসপোর্ট আইন এবং বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত আছি। কোন অসত্য তথ্য প্রদান অথবা কোনো তথ্য গোপন করলে উক্ত আইন আমার উপর আরোপযোগ্য হবে) টিক চিহ্ন বাটনে ক্লিক করতে হবে এবং তারপরে কনফার্ম করতে হবে।
তাহলে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করে নিতে পারবেন। যখনই আপনি কনফার্ম করে নিবেন, তারপরে আপনি চাইলে আবেদনের জন্য আবেদন সামারি সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।
পাসপোর্ট আবেদন করে নেয়ার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরে এবার আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে।
আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারবেন কিংবা এখান থেকে পেমেন্ট করার যে স্লিপ রয়েছে এবং আপনার পাসপোর্ট আবেদনের যে সমস্ত আবেদনপত্র আপনি আবেদন করার পরে ডাউনলোড করতে পারবেন, সেগুলো নিয়ে সোনালী ব্যাংকের শাখায় গিয়ে টাকা জমা দিতে পারবেন।
এছাড়াও আপনি যদি পাসপোর্ট এর টাকা জমা দেয়ার নিয়ম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত আর্টিকেলটি দেখার মাধ্যমে সেই সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
জেনে নিন: ঘরে বসে ই পাসপোর্ট ফি জমা দেয়ার উপায়
ই পাসপোর্ট আবেদন করার পরবর্তী কাজ
যখন আপনি ই পাসপোর্ট আবেদন করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নিবেন, তারপরে আপনাকে যথারীতিভাবে পাসপোর্ট আবেদনের যে ফি রয়েছে সেই ফ্রি জমা দিতে হবে।
এখনই আপনি পাসপোর্ট আবেদনের ফি জমা দিয়ে দিবেন, এবং নিশ্চিত হয়ে যাবেন আপনার আবেদন ফি জমা হয়েছে, তারপরে আপনাকে পাসপোর্ট আবেদন করার পরবর্তী মিশন অর্থাৎ পাসপোর্ট অফিসে চলে যেতে হবে।
পাসপোর্ট অফিসে কি কি নিয়ে যাবেন?
যখন পাসপোর্ট আবেদন করার কাজ সম্পন্ন করে ফেলবেন এবং একই সাথে পাসপোর্ট আবেদন ফি যথারীতিভাবে দিয়ে দিবেন, তারপরে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আবেদন করার পরবর্তী কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
সেক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু তথ্য সাথে নিয়ে তারপরে পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।
- পাসপোর্ট আবেদনের ফরম। (আবেদনের পরে ডাউনলোড করবেন)
- পাসপোর্ট আবেদনের সামারি কপি। (আবেদনের পরে ডাউনলোড করবেন)
- পেমেন্ট স্লিপ। (পেমেন্ট করার পরে ডাউনলোড করবেন)
- নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রের অরিজিনাল কপি।
- নাগরিকত্ব সনদ।
- এছাড়াও আবেদনের উপর ভিত্তি করে কাগজপত্র বেশি হতে পারে।
এ সমস্ত ইনফরমেশন নিয়ে আপনাকে পাসপোর্ট অফিসে চলে যেতে হবে। এবং তারপরে এগুলো পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে।
যখনই আপনি এই সমস্ত তথ্য জমা দিয়ে দিবেন তারপরে আপনি ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার জন্য এবং ছবি তোলার জন্য পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত।
যদি আপনার দেয়া তথ্য সঠিক থেকে থাকে তাহলে আপনাকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং এর সাথে ছবি তোলার জন্য একটি নিয়ে যাবে। সেখানে গিয়ে ছবি তুললেই, এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে দিলে, আপনার কাজ শেষ।
আবেদন জমা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি এর পরে কি করব?
আবেদন পত্র জমা দেয়া এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং একই সাথে ছবি তোলার পরে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে।
পাসপোর্ট বিভিন্ন রকমের ধাপ অতিক্রম করবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে এগুলো শেষ হয়ে যাবে।
এ সমস্ত ধাপের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল পাসপোর্ট পুলিশ ভেরিফিকেশন। পুলিশ ভেরিফিকেশন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য নিচে থেকে সংগ্রহ করে নিন।
জেনে নিন: পুলিশ ভেরিফিকেশন এর সকল তথ্য
পুলিশ ভেরিফিকেশন করার কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে তার পরবর্তীতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে, নির্দিষ্ট সময় পরে আপনি পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবেন।
কত ধরনের পাসপোর্ট আবেদন করা যায়?
আপনি চাইলে ভিন্ন তিন ক্যাটাগরিতে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন কিংবা যেকোন মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন।
আপনি চাইলে অতি জরুরী, জরুরী এবং সাধারন এই তিনটি ক্যাটাগরির মধ্যে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী এ সমস্ত ক্যাটাগরি নির্বাচন করে নিতে পারবেন।
এসমস্ত ক্যাটাগরিতে পাসপোর্ট আবেদন করার মূল কারণ হলো, পাসপোর্ট ডেলিভারি ডেট আগে-পিছে করিয়ে নেয়া। অর্থাৎ আপনি যদি অতি জরুরী অবস্থার জন্য পাসপোর্ট আবেদন করেন তাহলে সেক্ষেত্রে পাসপোর্ট ডেলিভারি ডেট এর সময়সীমা হবে ৩ কর্মদিবস।
এছাড়াও আপনি যদি সাধারন পাসপোর্ট আবেদন করেন তাহলে পাসপোর্ট ডেলিভারি সময়সীমা হবে ২১ কর্মদিবস। মোটকথা হলো; আপনি তাড়াতাড়ি পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য অতি জরুরী কিংবা জরুরি অবস্থায় পাসপোর্ট আবেদন করতে পারেন।
পাসপোর্ট আবেদন ফি কত টাকা?
যেকোনো উপায়ে আপনি যদি পাসপোর্ট আবেদন করেন তাহলে আপনাকে নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হবে। আপনি আপনার রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী পাসপোর্ট আবেদন ফি নির্ধারণ করে নিতে পারবেন।
অর্থাৎ বিভিন্ন রকমের আবেদন ফি এর মধ্যে আপনি চাইলে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন এবং এই সমস্ত ফি পরিশোধ করার মাধ্যমে আবেদন করার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন।
পাসপোর্ট আবেদন ফি হিসেবে যত টাকা বরাদ্দ রয়েছে, সে সম্পর্কিত তথ্য নিচে থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারেন।
৫ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৪৮ পাতার পাসপোর্ট
আপনি যদি ৫ বছর মেয়াদ সম্বলিত ৪৮ পাতার পাসপোর্ট আবেদন করে থাকেন, তাহলে এই পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত ফি আপনাকে দিতে হবে সেটি নিচে তুলে ধরা হলো।
- নিয়মিত পাসপোর্ট: ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৪,০২৫ টাকা
- জরুরী পাসপোর্ট: ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৬,৩২৫ টাকা
- অতি জরুরী পাসপোর্ট: ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,৬২৫ টাকা
১০ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৪৮ পাতার পাসপোর্ট
এছাড়াও আপনি যদি ১০ বছর মেয়াদের জন্য ৪৮ পাতার একটি পাসপোর্ট আবেদন করেন তাহলে এই পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্যাটাগরির জন্য আপনাকে যত টাকা বরাদ্দ দিতে হবে, সেটি নিচে তুলে ধরা হলো।
- নিয়মিত পাসপোর্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৫,৭৫০ টাকা
- জরূরী পাসপোর্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,০৫০ টাকা
- অতি জরুরী পাসপোর্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১০,৩৫০ টাকা
৫ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৬৪ পাতার পাসপোর্ট (বর্তমানে ৬৪ পৃষ্টা পাসপোর্ট সেবা বন্ধ)
৫ বছর মেয়াদ সম্বলিত ৬৮ পাতার পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে আপনাকে যে সমস্ত ফি দিতে হবে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
- নিয়মিত পাসপোর্ট- ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৬,৩২৫ টাকা
- জরূরী পাসপোর্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,৩২৫ টাকা
- অতি জরুরী পাসপোর্ট- ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১২,০৭৫ টাকা
১০ বছরের মেয়াদ সম্বলিত ৬৪ পাতার পাসপোর্ট
এছাড়াও ১০ বছর মেয়াদের জন্য ৬৪ পাতার পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত ফি বরাদ্দ হবে, সেগুলো সম্পর্কিত তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো।
- নিয়মিত পাসপোর্ট– ১৫ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ৮,০৫০ টাকা
- জরূরী পাসপোর্ট- ৭ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১০,৩৫০ টাকা
- অতি জরুরী পাসপোর্ট– ২ কর্মদিবসের মাঝে প্রদানঃ ১৩,৮০০ টাকা
আপনি যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখতে পারবেন, বিভিন্ন মেয়াদের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরির পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য আপনাকে ভিন্ন রকমের ফি পরিশোধ করতে হবে।
অর্থাৎ জরুরি অবস্থার জন্য পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত ফি এর প্রয়োজন হবে, অতি জরুরি অবস্থায় আবেদন করার ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি ফিসের প্রয়োজন হবে।
ঠিক একই রকমভাবে; সাধারণ পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম আবেদন ফি এর প্রয়োজন হবে।
পাসপোর্ট আবেদন করার পরবর্তী পদক্ষেপ
পাসপোর্ট আবেদন করার পরবর্তী সময়ে আপনাকে বেশ কিছু পদক্ষেপ পাড়ি দিয়ে তারপরে পাসপোর্ট নিজের কাছে নিয়ে আনার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নিতে হয়।
পাসপোর্ট আবেদন করার পরে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে আপনাকে যেই দুইটা পাড়ি দিতে হয় সেটি হল:
- বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন কিংবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রদান।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন
তাহলে আর দেরি না করে এখনই এই দুইটি বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নেয়া যাক।
পাসপোর্ট আবেদন করার কত দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন?
আপনি যদি সফলভাবে সমস্ত পদক্ষেপ অনুসরণ করে পাসপোর্ট আবেদন করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেন, তাহলে আবেদন করার কত দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাবেন?
অথবা পাসপোর্ট ডেলিভারি তারিখ সম্পর্কে কিভাবে আপনি জানতে পারবেন? এক্ষেত্রে আপনি যদি পাসপোর্ট ডেলিভারি ডেট সম্পর্কে অবগত হতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত আর্টিকেলে দেখে নিতে পারেন।
জেনে নিন: পাসপোর্ট ডেলিভারি ডেট কবে?
উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটি দেখে নিলে আপনি পাসপোর্ট আবেদন শেষ করার পরে পাসপোর্ট ডেলিভারি ডেট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিতে পারবেন। এবং এইভাবে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম কি? অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয়াদি প্রয়োজন, সে সমস্ত তথ্য সম্পর্কে এই আর্টিকেল আলোচনা করা হয়েছে।