ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম – খরচ এবং বিধি নিষেধ

আপনি যদি ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান কিংবা রেনু করতে চান, এবং তার পরে একেবারে ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম জেনে প্রিন্ট করার পরবর্তী অবধী কাজ করতে চান, তাহলে সেই কাজটি কিভাবে করবেন?

কিংবা অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট রেনু করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নেয়া কি সম্ভব? অথবা রেনু করার জন্য কত টাকা খরচ হবে সেই তথ্য আসলে কি?

মোট কথা হল, পাসপোর্ট রেনু করার নিয়মাবলী সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য, উপাত্ত আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।

ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম কত?

একজন নতুন পাসপোর্ট ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি যত টাকা দিয়ে একটি নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেন, ঠিক একই রকম ফি’র মাধ্যমে আপনাকে পাসপোর্ট রিনিউ করার কাজ সম্পন্ন করতে হয়।

সে জন্য আপনি যদি, পাসপোর্ট রিনিউ করার ফি সম্পর্কিত তথ্য জেনে নিতে চান, তাহলে সেটি নিচে থেকে জেনে নিতে পারেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে ৫ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ফি ৪,০২৫ টাকা এবং ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ফি ৬,৩২৫ টাকা দিতে হবে। অপরদিকে ১০ বছর মেয়াদী ৪৮ পাতার পাসপোর্ট ফি ৫,৭৫০ টাকা এবং ৬৪ পাতার পাসপোর্ট ফি ৮,০৫০ টাকা।

উপরে যে তথ্যটি দেয়া হয়েছে সেটি হলো, আপনি যদি একজন পাসপোর্ট ব্যবহারকারী হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদের জন্য পাসপোর্ট রিনিউ করে নিতে চান, তাহলে খরচ কত টাকা হবে সেই সংক্রান্ত তথ্য।

যখনই আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করার খরচ সম্পর্কিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন, তাঁর পরবর্তী সময়ে আপনি নিজেই পাসপোর্ট রিনিউ করার কাজ সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।

ই পাসপোর্ট রিনিউকরতে কি কি লাগে?

যে কোন কারণবশত আপনি যদি পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান, তাহলে সেই কারণের ওপর ভিত্তি করবে, পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য কি রকমের তথ্যের প্রয়োজন হতে পারে।

তবে খুবই সাধারণভাবে, যে সমস্ত তথ্যের প্রয়োজন হতে পারে, সে সমস্ত ডকুমেন্টসের কথা নিচে তুলে ধরা হলো:

  • আবেদনপত্রের সারাংশের প্রিন্ট কপি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট সহ)
  • জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা অনলাইন জন্ম সনদ।
  • এ চালান/ মানি অর্ডার/ ব্যাংক সার্টিফাইড চেক।
  • আপনার পূর্ববর্তী পাসপোর্ট এবং ডাটা পেইজের এর কপি।
  • এক্ষেত্রে আপনি যদি সরকারি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন, তাহলে সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে GO/NOC (যদি থাকে)
  • তথ্য সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।
  • রেজিস্ট্রেশন ফরম বা আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপি।

উপরে যেসমস্ত ডকুমেন্টস এর কথা মেনশন করা হয়েছে যে সমস্ত ডকুমেন্ট পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য প্রয়োজন হবে।

কোন কোন কারণে পাসপোর্ট রিনিউ করা যায়?

আপনি চাইলে বিভিন্ন কারণবশত পাসপোর্ট রিনিউ করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নিতে পারবেন।

এক্ষেত্রে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে আপনি যে সমস্ত কারণে পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন কিংবা পাসপোর্ট রিনিউ করার ক্ষেত্রে যে সমস্ত অপশন আপনি পাসপোর্ট অফিসে ওয়েবসাইটে পাবেন, সেগুলো সম্পর্কে তথ্য নিচে তুলে ধরা হলো।

EXPIRED: আপনি যে পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন সেই পাসপোর্ট এর মেয়াদ বর্তমানে শেষ হয়ে গেলে আপনি মেয়াদ বাড়ানোর জন্য পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।

LOST/ STOLEN: আপনার ব্যবহৃত পাসপোর্ট যদি কোন কারণে হারিয়ে যায় কিংবা চুরি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনি এই অপশন সিলেক্ট করার মাধ্যমে পাসপোর্ট রেনু করতে পারবেন।

তবে এই অপশন সিলেক্ট করার মাধ্যমে আপনি যদি রেনু করার কাজ সম্পন্ন করতে চান তাহলে তথ্য হিসেবে আপনাকে অবশ্যই থানার জিডি নাম্বার দেয়ার মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করে নিতে হবে।

সেজন্য, আপনার পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে অবশ্যই থানায় জিডি করে রাখুন। যাতে করে পাসপোর্ট পুনরায় আবেদন করার জন্য এই জিডি কপি ব্যবহার করতে পারেন।

জেনে নিন: অনলাইনে জিডি করার নিয়ম

DATA CHANGE: আপনি যদি তথ্য পরিবর্তন করতে চান, তাহলে তথ্য পরিবর্তনের কারণ হিসেবে আপনি এই অপশন সিলেক্ট করে পাসপোর্ট রেনু করতে পারবেন।

UNUSABLE: আপনার ব্যবহৃত পাসপোর্ট যদি ছিঁড়ে যায় কিংবা নষ্ট হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে এই অপশন ব্যবহার করার মাধ্যমে পাসপোর্ট রেনু করার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।

OTHER: এছাড়াও উপরে বর্ণিত কারণগুলোর মধ্যে থেকে কোনো কারণ যদি আপনার সাথে না মিলে তাহলে আপনি সর্বশেষ অপশন হিসেবে Other অপশনটি সিলেক্ট করে নিতে পারেন।

এবং এই অপশনটি সিলেক্ট করার মাধ্যমে উপরে বর্ণিত কারণ ছাড়া অন্য কোন কারণের জন্য আপনি যদি পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান, তাহলে সেই কারণের জন্য পাসপোর্ট রিনিউ করতে পারবেন।

আর যেসমস্ত কারণের জন্য আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন, সেই সমস্ত সম্ভাব্য কারণ সম্পর্কিত তথ্য উপরে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।

এবার আপনি যদি এই সমস্ত কারণগুলোর মধ্যে থেকে যে কোন একটি কারণের জন্য পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান, তাহলে অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে পাসপোর্ট রিনিউ করবেন? সেই সংক্রান্ত তথ্য এখান থেকে জেনে নিতে পারবেন।

পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম

এবার আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে করে বসে পাসপোর্ট রিনিউ করে নিতে চান, তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথম নিম্নলিখিত লিংকে ভিজিট করতে হবে।

যখনই উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করবেন, তখন সর্বপ্রথম তথ্য হিসেবে আপনার পাসপোর্ট সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে যথাক্রমে ৩ টি ধাপ পাড়ি দিতে হবে।

অর্থাৎ, উপরে উল্লেখিত লিংকে ভিজিট করার পরে যথাক্রমে Passport Type, Personal Information, Address এই তিনটি অপশনের থাকা প্রত্যেকটি তথ্য আপনার পাসপোর্ট অনুযায়ী ফিলাপ করে নিতে হবে।

ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম - খরচ এবং বিধি নিষেধ

যখন আপনি এই তিনটি অপশন যথাযথভাবে ফিলাপ করে নিতে পারবেন, তারপরে পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম অনুযায়ী আপনি গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপে চলে আসতে পারবেন, আর সেটি হল ID Documents

যখনই আপনি আইডি ডকুমেন্টস অপশনে চলে আসবেন, তখন (ID Documents) অপশন থেকে আপনার পূর্ববর্তী এমআরপি পাসপোর্ট (MRP Passport) অপশনটি সিলেক্ট করবেন এবং বিস্তারিত তথ্য দিবেন।

ID Documents অপশনে আসার পর, Yes, I have a Machine Readable Passport (MRP) এই অপশনটি সিলেক্ট করুন।

বিষয়টিকে আপনি যদি ভালোভাবে অনুধাবন করতে চান, তাহলে নিম্নলিখিত স্ক্রিনশটের দিকে নজর দিতে পারেন। এবং ঠিক একই রকমভাবে তথ্যটি ফিলাপ করে নিতে পারেন।

ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম - খরচ এবং বিধি নিষেধ

যখনই আপনি প্রত্যেকটি বক্স যথাযথভাবে ফিলাপ করে নিবেন, তারপরে আপনি গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি ধাপে চলে আসতে পারবেন।৷

এবং এখান থেকে, What is the reason for your passport request? এখানে Arrow চিহ্নে ক্লিক করে আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করার কারণ সিলেক্ট করুন।

এবার আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করার কারণ যেকোনো কিছু হতে পারে। হতেপারে, আপনার পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছে, অথবা আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে।

আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করার কারণ নির্বাচন করে নিন।

ই পাসপোর্ট রিনিউ করার নিয়ম - খরচ এবং বিধি নিষেধ

রেনু করে নেয়ার জন্য আপনি বিভিন্ন অনেকগুলো অপশন দেখতে পারবেন৷ আর এই সমস্ত সম্ভাব্য কারণ হলো: EXPIRED, LOST/ STOLEN, DATA CHANGE, UNUSABLE, OTHER,

আপনার পাসপোর্ট রিনিউ করার যে কারণ রয়েছে, সেই কারণ সিলেক্ট করে নিন।

যখন আপনি পাসপোর্ট রিনিউ করার কারণ নির্বাচন করে নিবেন, তার পরবর্তী পেইজে আপনাকে আপনার পাসপোর্ট নাম্বার বসিয়ে দিতে হবে।

পাসপোর্ট প্রদানের তারিখ ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ লিখুন। (তারিখগুলো, পাসপোর্টের ছবির পেইজে পাবেন)। এ সমস্ত ধাপ যথাযথভাবে সম্পন্ন করুন।

এখন এই সমস্ত ধাপ যথাযথভাবে সম্পন্ন করে নিবেন, তার পরবর্তী পেইজগুলো একদম নতুন পাসপোর্ট আবেদন করার মত যেভাবে আপনি বক্স ফিলাপ করেছেন ঠিক একই রকমভাবে বক্স পাবেন।

এবং একদম সর্বশেষে, আপনার পিতা মাতার তথ্য, স্বামী বা স্ত্রীর তথ্য, পাসপোর্টের ধরণ ও ডেলিভারীর ধরণ সিলেক্ট করে আবেদটি সম্পন্ন করতে হবে।

যখনই আবেদন করার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নিবেন, তখন খুব স্বাভাবিকভাবে আবেদন ফি জমা দিতে হবে।

জেনে নিন: অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন ফি জমা দেয়ার নিয়ম

যখনই আপনি পাসপোর্ট আবেদন ফি জমা দেয়ার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে নেবেন, তখন আপনার প্রত্যেকটি কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।

পাসপোর্ট রিনিউ/ রেনু করার নিয়ম নিয়ে কিছু প্রশ্ন উত্তর FAQs

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কত টাকা ফি দিতে হবে?

খুব স্বাভাবিকভাবে আপনি যদি পাসপোর্ট রিনিউ করতে চান, তাহলে রিনিউ করার জন্য আপনাকে নতুন আবেদন করার জন্য যে ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল সেই ফি দেয়ার মাধ্যমে রিনিউ করতে হবে।

অর্থাৎ রিনিউ করার জন্য নতুন আবেদন ফি এর চেয়ে বেশি অতিরিক্ত কোন খরচ নেই।

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কত দিন লাগে?

পাসপোর্ট রিনিউ করতে কত দিন লাগবে, সেটা নির্ভর করবে আপনার আবেদনের প্রকৃতির উপর।

দেখে নিন: পাসপোর্ট পেতে কতদিন লাগে?

উপরে উল্লেখিত আর্টিকেলটি দেখে নিলে পাসপোর্ট রিনিউ করার দিন সম্পর্কিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

3 − three =

Scroll to Top